• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :

পর্যটকদের বরণে প্রস্তুত প্রকৃতির সৌন্দর্যের লীলাভূমি কমলগঞ্জ

আমিনুল ইসলাম হিমেল॥ / ৯২ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশিত : শুক্রবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২২

প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ। সবুজে ঘেরা চাবাগান দেখতে প্রতিবছরইঈদের ছুটিতে চায়ের রাজধানী কমলগঞ্জে ভিড় জমান পর্যটকেরা। তবে এবারের চিত্রও ভিন্ন নয়। ঈদের ছুটিশুরু হতে আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। ঈদের ছুটিতে দেশের নানা প্রান্ত ঘুরে বেড়ান পর্যটকেরা। প্রতিবছরইঈদের টানা ছুটিতে হাজারো পর্যটকে মুখর হয়ে ওঠে পর্যটন নগরী কমলগঞ্জ। তাইতো পবিত্র ঈদুল আযহারছুটিতে পর্যটকদের বরণ করতে প্রস্তুত। ঈদের ছুটিতে ঘুরে বেড়াতে অনেকেই বেছে নিয়েছেন কমলগঞ্জকে। এরমধ্যে পর্যটন নগরীর শহরের বাইরের হোটেলরিসোর্টগুলোর ৮০ ভাগ কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে। মৌলভীবাজারজেলার সর্বাধিক পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে কমলগঞ্জ উপজেলায়।

পর্যটন ক্ষেত্রে অপার সম্ভাবনাময় এই উপজেলায় ২০টিরও বেশি পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। জীব বৈচিত্র্যে ভরপুরকমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, নয়নাভিরাম মাধবপুর লেক, হামহাম জলপ্রভাত,মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসঐতিহ্যের বাহক বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ, পদ্ম ছড়া লেক, বণ্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য রাজকান্দিবন, শমসেরনগর বিমানবন্দর, প্রাচীন ঐতিহ্যের বাহক লক্ষীনারায়ন দিঘী, ২০০ বছরের প্রচীন ছয়চিরী দিঘী, শমসেরনগর বাগীছড়া লেক, আলীনগর পদ্মলেক, মাগুরছড়া পরিত্যক্ত গ্যাসফিল্ড, অপরূপ শোভামন্ডিত উচুনিচু পাহাড়বেস্টিত সারিবদ্ধ চা বাগানসহ বাংলাদেশের বৃহৎ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী মণিপুরী সম্প্রদায়ের নিরাপদআবাসস্থল উপজেলায়। এছাড়া প্রকৃতির পূজারী খাসিয়া নৃগোষ্ঠীসহ গারো, সাঁওতাল, মুসলিম মণিপুরী, টিপরা গারোদের নিরাপদ আবাসস্থলও রয়েছে এই উপজেলায়। লেক আর পাহাড়ের মিতালী, সাথে ঝর্ণাকমলগঞ্জের এসব প্রাকৃতিক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে প্রতিবছর ঈদের টানা ছুটিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেছুটে আসে হাজার হাজার পর্যটক। নাগরিক জীবনের শতব্যস্ততার মধ্যে একটু ছুটি মিললেই অনেকেই ছুটে যানসাগরপাহাড়অরণ্য ঐতিহ্যের সান্নিধ্যে। ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলোও মুখরিত হয় পর্যটকদর্শনার্থীদের পদভারে। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে প্রাকৃতিক সুন্দর্যের রূপসজ্জা দেখতে প্রতি বছরেই পবিত্রঈদুল আযহার টানা ছুটিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন ভ্রমণপিপাসু পর্যটকরা। এবারও ঈদুলআজহার টানা ছুটিতে তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। আর এই ভ্রমণপিপসু পর্যটকদের ভ্রমণ করে নিতে প্রস্তুত রয়েছেকমলগঞ্জের দৃষ্টিনন্দন পর্যটন কেন্দ্রগুলো।

এসব পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে শুধু দেশী পর্যটকই নয় বিদেশী পর্যটকদের পদভারে মুখরিত হয় উপজেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলো। ইতিমধ্যে বন বিভাগের রেস্টহাউজের পাশাপাশি হীড বাংলাদেশের রেষ্টহাউসসহ অন্যান্য রেষ্টহাউস হোটেলগুলোর রুম অগ্রীম বুকিং হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে ঈদকে কেন্দ্র করেপর্যটকদের নিরাপত্তায় পর্যটক পুলিশের পাশাপাশি কমলগঞ্জ থানা পুলিশের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কঠোরনিরাপত্তা ব্যবস্থা।উপজেলার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তার জীবনধারা সংস্কৃতিসহ প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর জনপদে অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোর সাথে সদ্য আবিস্কৃত নতুন সংযোজন ফিকল জলধারা যে কোনোপর্যটকের দৃষ্টি কেড়ে নেবে। তাই তো পবিত্র ঈদুল আযহায় এসব আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট পর্যটকদের বরণকরতে প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপার লীলাভূমি কমলগঞ্জের বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থললাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে দর্শণীয় আকর্ষণীয়। বাংলাদেশের সাতটিবন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য দশটি জাতীয় উদ্যানের মধ্যে লাউয়াছড়া অন্যতম। এই বনের পরিচিতি শুধু দেশেরমধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় এটি আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত একটি পর্যটন কেন্দ্র। জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে সুন্দরবনেরপরেই লাউয়াছড়ার অবস্থান। চিরহরিৎ বনাঞ্চল বিলুপ্তপ্রায় উল্লুকেরকের নিরাপদ আবাসস্থল। এছাড়াওনানা ধরনের দুর্লভ প্রাণী, কীটপতঙ্গ আর গাছপালার জন্য অরণ্য বিখ্যাত।

১৯৯৬ সালে পশ্চিম ভানুগাছ সংরক্ষিত এই বনের প্রায় ১২৫০ হেক্টর এলাকাকে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানহিসেবে ঘোষণা করা হয়। উপজেলায় পাহাড়ি উঁচুনিচু টিলার উপর সবুজ চা বাগানবেষ্টিত, জাতীয় ফুলদুর্লভ বেগুনি শাপলার আধিপত্য আপনাকে আনন্দের বাড়তি মাত্রা যুক্ত করবে পদ্মকন্যা মাধবপুর লেক।কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর চা বাগানে নয়নাভিরাম মনোরম দৃশ্য মাধবপুর লেক ভ্রমন পিপাষু মানুষেরজন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান তার পাশেই পদ্মছড়া লেক। মাধবপুর লেকের দৃশ্য উপভোগ করে বেরিয়ে এসেএকই রাস্তায় প্রায় ১০ কিঃমিঃ যাওয়ার পরই বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ। চাইলেই ঘুরেআসতে পারেন সেখান থেকে। 

[১১] কমলগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার পূর্বদক্ষিণে রাজকান্দি বন রেঞ্জের কুরমা বনবিটএলাকার প্রায় ১০ কিলোমিটার অভ্যন্তরে দৃষ্টিনন্দন হামহাম জলপ্রপাত। স্থানীয় পাহাড়ি অধিবাসীরা জলপ্রপাতের ধ্বনিকে হামহাম বলে। বনের ভেতরেই রয়েছে সম্প্রতি আবিস্কৃত ফিকল ঝরনা। বনের কুরমাখাসিয়া পুঞ্জির পাশেই দৃষ্টি নন্দন ঝরনার অবস্থান। সেখানে সরাসরি যানবাহন নিয়ে পৌঁছার ব্যবস্থা নেই।বাসে এবং সিএনজি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন...
Developed By Radwan Web Service